বাবার চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতে গিয়ে সড়কে লাশ হলো ছেলে

ভোলায় অসুস্থ বাবার চিকিৎসার জন্য টাকা জোগাড় করতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেলো ছেলের। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে।

বাবার চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতে গিয়ে সড়কে লাশ হলো ছেলে
বাবার চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতে গিয়ে সড়কে লাশ হলো ছেলে

এ ঘটনার পর নিহতের পরিবারের স্বজনদের আহাজারিতে হাসপাতালে হ্নদয়বেদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় আরো এক যুবক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

সোমবার (৭ নভেম্বর) দুপুর ১টার দিকে ভোলা-লক্ষীপুর আঞ্চলিক সড়কের বাপ্তা পুলিশের দোকান নামক জায়গায় এ ঘটনা ঘটে।নিহত হোসেন (২২) ভোলা সদর উপজেলা ৩নং পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়ন ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদুর চর গ্রামের মো. আবুল কালামের ছেলে।পুলিশ প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের পরিবারের স্বজনরা জানান, নিহত হোসেনের বাবা আবুল কালাম গত ২ বছর ধরে যক্ষ্মা (টিবি) রোগে আক্রান্ত। তিনি পেশায় একজন রিকশা চালক। রিকশা চালিয়ে সংসারের খরচ জোগাড়ে। সম্প্রতি তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। সংসার ও তাঁর চিকিৎসার খরচ জোগাড়ে বেশ হিমশিমে পড়তে হয় তাকে। বাধ্য হয়ে আজ সকালে হোসেন তাঁর বাবার অটোরিকশা নিয়ে রাস্তায় নামেন।

দুপুর ১টার দিকে ভোলা শহর থেকে যাত্রী নিয়ে পরানগঞ্জ বাজার যাওয়ার পথে বিপরীত থেকে দিকে আসা দ্রুতগামী একটি মাহিন্দ্র তাঁর অটোরিকশাটিকে চাপা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এবং ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।

নিহতের চাচাতো ভাই আনোয়ার আরিফ জানান, হোসেন ভোলা ওবায়দুল হক মহাবিদ্যালয়ে ইন্টারমিডিয়েট ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। হঠাৎ তাঁর বাবা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে বাবার চিকিৎসার জন্য টাকা জোগাড় করতে গিয়েই সড়ক দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় ওই রিকশায় থাকা মো. রাসেল (২৮) নামে এক যাত্রী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তিনি পরাণগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ি। বর্তমানে তিনি ভোলা সদর হাসপাতালে পুরুষ সার্জারী ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন।

ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন ফকির জানান, মাহিন্দ্র গাড়িটি অটোরিকশাটিকে চাপা দিলে উভয় গাড়ি রাস্তার পাশে থাকা পুকুরে পড়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ নিহত হোসেন ও আহত রাসেলকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে এ ঘটনায় মাহিন্দ্র চালকের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ঘটনাটির তদন্ত চলছে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।