স্ত্রীকে হত্যা করে চট্টগ্রাম থেকে লাশ নিয়ে ভোলায় এসে স্বামী আটক
প্রায় ৬ মাস আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলা ৬নং হাসান নগর ইউনিয়ন হাসান নগর গ্রামের মো. বশির আহম্মেদের মেয়ের সঙ্গে একই গ্রামের মো. তাজল জমাদারের ছেলের।

বিয়ের কয়েকমাস তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের কাটলেও হঠাৎ দাম্পত্য জীবনে কলহ শুরু হয়। সেই কলহের জের ধরেই গত ১ নভেম্বর চট্টগ্রাম বহদ্দারহাট ফরিদা টাওয়ার এলাকায় ভাড়াটিয়া বাসায় স্ত্রী শাহিনা বেগমকে (১৯) পিটিয়ে হত্যা করে রাজমিস্ত্রী স্বামী মো. নোমান (২৫)।এরপর সেখান থেকে স্ত্রীর লাশ নিয়ে ভোলায় এসে আটক হোন নোমান।বোরহানউদ্দিন থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) আবদুল্লাহ আল মামুন এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
নিহত শাহিনার ছোট বোন সুমা আক্তার জানান, ৬ মাস আগে নোমানের সঙ্গে তাঁর মেঝো বোন শাহিনা বেগমের বিয়ে হয়। গত ৩ মাস আগে নোমান গ্রামের বাড়ি ভোলা থেকে শাহিনাকে চট্টগ্রাম বহদ্দারহাট ফরিদা টাওয়ার এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে একটি ভাড়াটিয়া বাসায় তাঁরা বসবাস করতেন। তাঁর পাশেই সুমা তাঁর বাবা মাকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন। প্রতিদিন সকালে শাহিনা সুমার বাসায় গিয়ে নাস্তা করতেন। কিন্তু বুধবার সকালে শাহিনা সুমার বাসায় নাস্তা করতে যায়নি। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর মেয়ে নাস্তা করতে না আসায় শাহিনার মা শাহিনার ঘরে গিয়ে দেখেন তাঁর গলায় তোয়ালে পেঁচানো এবং তাঁর লাশ খাটের ওপর পড়ে আছে। তখন নোমান ঘরে ছিল না।
শাহিনার মায়ের ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে গিয়ে দেখেন তাঁর লাশ খাটের ওপর পড়ে আছে। ঘন্টাখানেক পর নোমান ঘরে আসে। এসময় সে দাবি করে শাহিনা গলায় তোয়ালে পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
এরপর আজ বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে শাহিনার লাশ নিয়ে ভোলায় আসে নোমান। বাড়ির লোকজন লাশের শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখে তাদের সন্দেহ হয়। পরে বোরহানউদ্দিন থানা পুলিশকে বিষয়টি অবগত করলে পুলিশ হাসান নগর গ্রামে আসে। এরপর পুলিশ লাশ দেখে নোমানকে ঘটনার সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করলে নোমান জানায়, মঙ্গলবার রাতে দাম্পত্য জীবনের কলহ নিয়ে শাহিনার সঙ্গে তাঁর কথা কাটাকাটি হয়। এরই জের ধরে নোমান তাকে লাথি মারলে তার মৃত্যু হয়। পরে সে নিজেই শাহিনার গলায় তোয়ালে পেঁচিয়ে হত্যার ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে চেয়েছিল।
বোরহানউদ্দিন থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন অনুযায়ী শাহিনাকে হত্যা করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাঁর স্বামীকে আটক করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে ঘটনাস্থল যেহেতু চট্টগ্রামে, সেহেতু এ ঘটনা নিয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে মামলা নিব।